বৃহস্পতিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

POST NO.16 বইমেলা ও একটি স্বপ্ন পূরণ

বন্ধুরা,শুরু হয়ে গেছে ৪৩তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা ২০১৯।গত ৩১এ জানুয়ারী থেকে শুরু হওয়া এই মেলার আজ অষ্টম দিন।মেলা চলবে আগামী ১১ই ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত।এই আট দিনে বইমেলা থেকেছে অনেক ঘটনার সাক্ষী।সেই ঘটনা গুলো একাধারে যেমন মজার,আবার কিছু ঘটনা বেদনারও।আবার কিছু ঘটনা আছে যা কিছু কিছু নামকরা পাবলিশার্সদের প্রতি ক্রেতাদের ভ্রুকুটির কারণও হয়েছে।
যাক সে কথা।এবার আসি আমার নিজের কথায়।বই আমাকে  সর্বদা টানে।সারা বছর আমি কলেজ ষ্টিটের পথে পথে ঘুরে বেড়াই পুরোনো ও দুষ্প্রাপ্য বইয়ের সন্ধানে।কিন্তু কলকাতা বইমেলার ফ্লেভারটাই আলাদা।ওখানে না যেতে পারলে, বিশাল কিছু একটা মিস হয়ে যাওয়ার চান্স থাকে প্রবল।আর আমি সেই চান্সকে চান্সই দিতে চাই না!
ছোটোদের স্বর্গরাজ্য।
বছরের এই একটা সময়ে আমি সাক্ষাৎ করতে পারি আমার দূর দূরান্তের বন্ধুদের সাথে।তাঁদের মধ্যে বেশীর ভাগ বন্ধুর সাথে আমার আলাপ,ফেসবুকের মাধ্যামেই।সারা বছর নানান কাজের চাপে সবাই সবার সাথে মোলাকাত করতে পারেন না।কিন্তু এই বইমেলা কোথাও যেন,আমাদের এক সূত্রে বেঁধে টেনে নিয়ে আসে অক্ষর শব্দ ও ছন্দের এই পূণ্যভূমিতে।প্রতি বছরের মতো এবারেও সেই টান বা আলাপ চারিতার কোনো অন্যথা হয়নি।গত ২রা ফেব্রুয়ারী প্রথম যাই মেলায়।তারপর গতকাল অর্থাৎ,৬ই ফেব্রুয়ারী আবার গেছিলাম।অনেক ভালো লাগা তৈরী হলো।এই দুই দিন পুরোনো ও নতুন বন্ধুদের সাথে দেখা হোলো,কথা হোলো।এই আনন্দটা আরো কয়েকগুণ বেড়ে যেত যদি জ্যামারের কারণে আমাদের সবার মোবাইল ফোনের সিগন্যাল জ্যাম না হোতো।কিন্তু তাও সব কিছু ছাপিয়ে এই যে আড্ডা,এটা কিন্তু সেরা পাওনা আমাদের সবার কাছেই।
খুব সুন্দর কনসেপ্ট।ভ্রাম্যমাণ পুস্তক বীপণি
আমাদের সবার পছন্দের 'বুক ফার্ম'এর ষ্টল ৩৩৬ এ বাম দিক থেকে সোনাল দা(বসে),বুকফার্ম এর কর্ণধার শান্তনু দা,পাশে সোহেল দা। 
সোহেল দা'র সাথে সুমিত দা (ডান দিকে)

ডবল ফ্যান্টম!!
 Mr.Walker (স্বাগত দত্ত বর্মণ)এর সাথে আমি 'অরণ্যদেব'
জ্যোতির্বাণ দা'র সাথে
বাম দিক থেকে স্বাগত,আমি,সানি,কুন্তল
বিখ্যাত কমিক্স শিল্পী শ্রী দিলীপ দাস স্যারের সাথে আমরা।
(বামদিক থেকে দ্বিতীয় জন)
বাম দিক থেকে রূপক,দেবাশিষ,আমি,স্বাগত,ইন্দ্রনীল দা,রুস্তম দা। 


                           অয়ন দার(সাদা জামা) সাথে আমরা
এক লেপচা বন্ধুর সাথে।মেঘালয় পর্য্যটনের ষ্টলে।
মেলার মুক্ত মঞ্চে "দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার গানের ওপারে" গানটি পরিবেশন করছেন শিল্পী

না,এটা কোনো মূর্তি নয়।ইনি একজন শিপ্লী।ইনি একজন মডেল।রাজা রামমোহন রায় সেজেছেন।কতটা ধৈর্য্য,কতটা অধ্যাবসায় থাকলে,রোজ গারের জন্যে এই ভাবে ঠায় নিশ্চল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা যায়!!শত কুর্ণীশ ও কম হবে এঁনার জন্যে।মন থেকে প্রণাম জানাই।
এবারেই প্রথম ড্রোন দেখলাম বইমেলায়।ড্রোনের মাধ্যমে পুরো বই মেলার স্কাই ভিঊ নেওয়ার তোড় জোড় ছলছে।









  

 প্রতি বছর আমি  বইমেলায় গিয়ে বই কেনার থেকে শুরু করে আড্ডা দেওয়ার পাশাপাশি এই সব দারুন দারুন আর্টের ছবিও তুলি।এবারেও তার অন্যথা হোলো না। নতুন বই দুটি কিনেছি।আর সব পুরোনো বই।ফেসবুকে ছবি আছে,তাই এখানে আর দিলাম না।

আচ্ছা এবার আসি,আমার 'স্বপ্ন পূরণ'এর প্রসঙ্গে।বেশ কিছুদিন আগে আমার ফেসবুকীয় বন্ধু অর্পিতা'র মাধ্যমে আমি একটি নতুন পত্রিকা দলের সাথে যুক্ত হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করি।পত্রিকার নাম "রডোডেনড্রন"। একটা লেখা সেখানে আমি দিয়েছিলাম অর্পিতার কথায়।।সেটা যে মোনোনিত হবে তা ভাবিনি।সেটি পরে ছাপাও হয়।এর আগে আমার  অনুবাদ করা কমিক্স বিভিন্ন ম্যাগাজিনে ছাপা হলেও মৌলিক লেখা হিসেবে,তাও আবার ছাপার অক্ষরে এই প্রথম মুক্তি পেল এটি।গল্পের নাম "খাদক"।।আমি আনন্দিত,আপ্লুত।এর পুরো ক্রেডিট কিন্তু অর্পিতারই প্রাপ্য।ও আমাকে এই ব্যাপারে না বললে আমি এই সুন্দর প্রয়াস সম্পর্কে জানতেই পারতাম না।ও খুব সুন্দর লেখা।ওর লেখার বাঁধন বেশ শৈল্পিক।এই পত্রিকায় ওর একটা লেখা আছে।গল্পের নাম "অমানিশার কালো রাত"।এ'ছাড়া আছে আমার অনেক দিনের বন্ধু কুন্তল-এর একটা লেখা।গল্পের নাম "মৃত্যু"।
আমাদের অন্য বন্ধু যেমন- তৃষানী'র লেখা "অপরাজিতা ",সৌমি'র লেখা "আলোর গতিপথে",রাহুল(বুনো হাঁসা)-এর লেখা "চন্দ্রগ্রহণ" পড়ে আমি খুব আনন্দিত ও শিহরীত।ওদের লেখণী যেন উদ্দাম বেগে ছুটে চলে,সেই কামনা করি ঈশ্বরের কাছে। গতকাল বইটা ৪৪৫ নং ষ্টলে আসতে না আসতেই সব সংখ্যা নিঃশেষি হয়ে গেল দেখলাম চোখের সামনে।তবে,আমাদের বন্ধু ও কোষাধ্যক্ষ অনিন্দ্য সান্যাল মহাশয়,আমাদের জন্যে কিছু সংখ্যা নিজের কাছেই রেখে দিয়েছিলেন।তাই শেষে কিছু সংখ্যা পেয়েছি। পেয়ে কী যে খুশী হয়েছি, সেটা বলে বোঝাতে পারবো না।আমাদের মধ্যে এই খুশীর বাতা বরণ তৈরীর জন্যে আমি আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ দেব আমাদের পত্রিকার সম্পাদক তানিয়া সেনগুপ্তঅস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়-কে।কার্যনির্বাহী সম্পাদক সুদেষ্ণা সরকার-কে।আর সহ সম্পাদক পল্লব রায়-কে।এরা না থাকলে এই চারাগাছের জন্ম হোতো না,যাকে অনেকটা পথ চলতে হবে মহীরুহতে পরিণত হওয়ার জন্যে।

আমাদের স্বপ্নের ফসল
"রডোডেনড্রোনিয়ানস"
ডান দিক থেকে পল্লব,রাহুল(বুনো হাঁসা),তানিয়া অস্মিতা,আমি,কুন্তল
বাকীদের খুব মিস করেছিলাম সেদিন।
তানিয়ার সাথে তৃষানী



এক রাশ ভালোলাগা স্মৃতি হয়ে রইলো।